আবেশ মাখা জজাহাতু
আমরা
এখন আদিবাসী অধ্যসিত গ্রাম জজাহুাতু। হোটেল থেকে এক অদিবাসী তরুণ
মেঘকৃষ্ণ নিয়ে চললো পাহাড়ের ঢাল দিয়ে পিচ রাস্তা। জাজিয়া আর সিন্ধিয়া
পাহাড়ে নানা প্রজাতির অসংখ্য গাছ-গাছালি। এছাড়া দেখা মিললো পলাশের
অকৃত্রিম শোভা। রাস্তার পাশেই এক উচ্চ বিদ্যালয়।
মেঘকৃষ্ণদের স্কুল। এখানে সে পড়াশুনা করেছে।
সামনে
লায়েক বাঁধ। লায়েকরা খাল খোড়বার জন্য জমি দান করেছিল। তাই বাধেঁর এই
নামকরণ। বাঁধের আসেপাশে অহল্যাভূমিতে দাঁড়িয়ে আছে পর্ব্বতশ্রেণী। পূজা
পাহাড় আর টেবিলটপ পাহাড়ের মাঝে সূর্য্যোদয় প্রথম প্রেমের স্মৃতির মতই
অমলিন হয়ে থাকবে চিরকাল।
জজাহতু নামের মানে বিশ্লেষণ করে যানা যায় জজা মানে তেঁতুল আর হাতি মানে বসতি। এক সময়কালে এখানে প্রচুর তেঁতুল গাছ ছিল।
এবার
লাকড়াকাদি বাঁধ রূপাই নদীর উপর। পথ বেশ মনোরম। আছে কুসুম, সেগুন আল
পলাশের সমারোহ। মাঝে মধ্যে দেখা যাবে ময়ূরের। রূপাই নদীর ওপারে অপরূপ
পাহাড় নাম জাম্পানী। এবার ল্যাকড়াকুঁদি ড্যাম এখান থেকে জারিয়া,
সিন্দ্রয়া, আর কীর্তনীয়া পাহাড় স্পষ্ট দেখা যায়। বাঁধের পাশে জলাধার
প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে স্বর্গরাজ্য। এখানে কান পাতলে শোনা যায় ময়ূরের
কেকারব।
পাহাড়ের উপর আছে একটা শিব মন্দির। বছরে কোন
এক সময়ে পাহাড়ের ঢালে কীর্ত্তন হয় তাই পাহাড়ের নাম কীর্ত্তনীয়া। এখান থেকে
দেখা যায় মাচা মাচাটুঙ্গী। পাহাড়ে উঠলে চোখে পড়বে জজাহাতুকে।
কয়েক বছর আগে এখানে মাওবাদিদের বন্দুকের আওয়াজে গোটা এলাকা কেঁপে উঠতো।
জজাহাতু গ্রাম ছিলো প্রথম রাজা ছিলেন ডবু সাহেব। এরপর বংশানুক্রমে রাজা হন যথাক্রমে সরিত প্রসাদ সিং দেও ও সজু সিং দেও।
সান্দিয়া
পাহাড়ে জৈষ্ঠ্য মাসে পাহাড় পূজো এবং উৎসব হয়। জজাহাতুতে কখনো কখনো ছৌ
নৃত্য হয়ে থাকে আবার আদিবাসীদের পাতা নাচ ও কাঠি নাচও হয়ে থাকে।
অযোধ্যা
হিলটপ জিলিংসেরেং হার হলেই দেখা যাবে পাঁড়ড়ি ড্যাম। এই ড্যামের আরেক
নাম মরাভাসা ড্যাম। জানা গেলো মুড়া জাতির লোকজন এখানে বাস করতেন তাই এই
এলাকার নাম মূড়াভাসা।
এখানে পলাশ কুল, কুসুম, ইত্যাদি গাছে লাক্ষা চাষ হয়।
পাশে মহূয়ার সুন্দর সুভাস পাওয়া যাবে।
ইছাপ মোড় ছেড়ে বাগমুন্ডি রোড। বাঁ দিকে কুকি ড্যাম।
বাঁধের পাশে শ্রী চৈতন্য ভজনা আশ্রম।
কিভাবে যাবেন ঃ- হাওড়া থেকে ট্রেনে মুড়ি জংসন। সেখান থেকে গাড়ি করে সোজা জজাহাতু।
কোথায় থাকা যাবে ঃ ঝালদায় হোটেল আছে। ইকো রিসর্ট।
![]() |
0 মন্তব্যসমূহ