চলুন, গুপ্তিপাড়া মঠে ঘুরে আসি
দু'টি সাড়া জাগানো মেলার জন্য শান্তিপুর ও গুপ্তপাড়া জগৎ বিখ্যাৎ হয়ে আছে। শান্তিপুরের রাস আর গুপ্তিপাড়ার রথযাত্রা। দুটোই দেখার মত।
ষোড়শ শতাব্দির মধ্য সময়ে সত্যদেব সরস্বতী আবির্ভাব হয়ে গুপ্তিপাড়ার মঠ স্থাপন করেন। তিনি ছিলেন শৈব দশনামী গোষ্ঠীভূক্ত। গুপ্তিপাড়ার মঠ,দশনামী শৈব্য দ্বারা পরিচালিত হলেও এখানকার অধিষ্ঠাত্রী দেবতা হচ্ছে বিষ্ণু। এক সময় এখানে পটে আঁকা দশমহাবিদ্যার নিত্যপুজো হতো। গুপ্তিপাড়ার মঠ তারকেশ্বর শৈব মঠের অধিন।
পাঁচিল ঘেরা স্থান:
মধ্যে তিনটি মন্দির বৃন্দাবন মন্দিরকে সামনে রেখে দুপাশে রয়েছে বিষ্ণুমন্দির আর রামমন্দির। এছাড়া বৃন্দামন মন্দিরের লাগোয়া রয়েছে বাংলার প্রাচীনতম জোড়াবাংলো ভাঙাচোরা চৈতন্য মন্দির। মন্দিরগুলি ইটের তৈরী সাঁকো দিয়ে জোড়া, ফলে এই মন্দির থেকে অন্য মন্দিরে অনায়াসে যাওয়া যায়। আটচালা বৃন্দাবন মন্দিরটি সবচেয়ে বড়। এর ঢাকা বারান্দায়, দেওয়ালে, সিলিংএ ও গর্ভগৃহের মধ্যে রয়েছে সুন্দর ফ্রেঞ্ঝের কাজ। আজও অটুট। রাম মন্দিরের দুটো দেওয়াল টেরাকাটা অলঙ্করণে সজ্জিত। ৬০ ফূট উচ্চ মন্দিরটি নির্মাণ করেন কলকাতার বাবু নয়নচাঁদ মল্লিক মহাশয়।
বৃন্দাবন চন্দ্রের রথযাত্রা গুপ্তিপাড়ার প্রধান উৎসব। মঠের পাশেই রথটি রাখা আছে। এত উঁচু রথ খুব কম দেখা যায়। রথযাত্রার সময় প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়।
ঘটনাটি না বললে মানাবেনা। রথযাত্রা উপলক্ষে " ভাড়ার লুঠ" বলে একটি লোক অনুষ্ঠান মেলার জন্মলগ্ন থেকে চলে আসছে। রথের পুর্ণ্য যাত্রার আগের দিন পুজো হয়ে গেলে দেবতার ভোগ ঠাকুরকে নিবেদনের পর পুরোহিত মশাই ভাড়ার উন্মক্ত করে দেন। ব্যাস, বাইরের সাধারণ মানুষ ঘরে ডুকে প্রসাদ লুঠ করে নেয়। এই হচ্ছে ভাড়ার লুঠ।
গুপ্তিপাড়া খুবই প্রথিতযশা ব্যাক্তিরা জন্মেছেন,যেমন--চীরঞ্জীব ভট্টাচার্য্য, বানেশ্বর বিদ্যালঙ্কার, রামগোপাল বিদ্যাবাগীস। বাংলার নবাব সিরাজদৌলার প্রধান সেনাপতি মোহনলাল এই গুপ্তিপাড়ায় জন্মেছিলেন।
কীভাবে যাবেন :-- হাওড়া থেকে কাটোয়া লোকালে গুপ্তিপাড়া স্টেশনে নেমে টোটোয় গুপ্তিপাড়া মঠ স্টপেজে থামতে হবে । শিয়ালদহ থেকে ব্যান্ডেল, ব্যান্ডল থেকে কাটোয়া লোকালে গুপ্তিপাড়া স্টেশান। শান্তিপুর থেকে গঙ্গা পেরিয়ে গুপ্তিপাড়া। টোটো সারদিনের ভাড়ায় গোটা দর্শনীয় স্থানগুলো ভালোভাবে দেখা যায়।
ঘুরা যাবে কাঁকড়াঝোড়ে, চলুন যাই--
২০০৪ সালে ডিনামাইট ফাটিয়ে কাঁকড়াঝোড় বনবাংলোটি উড়িয়ে দেয় মাওবাদিরা। তারপর থেকে পর্যটকদের চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। গত কয়েক মাস ধরে ঝাড়গ্রাম DMএর তৎপরতায় বাঁশপাহাড়ি GPর তৎপরতায় নতুন করে গড়ে ওঠে কাঁকড়াঝোড় বনবাংলোটি। আধুনিক ব্যাবস্থাসহ গড়ে উঠেছে বাংলোটি। এক সাথে তিনটি ঘরে আটজন পর্যটক থাকতে পারবেন। আবারো বাঁশপাহাড়ি বেড়াতে যাওয়া যাবেন কিন্তু।
কীভাবে যাবেন ;-- হাওড়া থেকে যেকোন ট্রেনে ঝাড়গ্রাম স্টেশন। টোটোয় চেপে কাঁকড়াঝোড় বনবাংলো। ঝাড়গ্রাম জেলা শাসক দপ্তর থেকে বনবাংলো বুক করা যাবে।
0 মন্তব্যসমূহ